নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ পুলিশের ১৮০ জন সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য এক অভূতপূর্ব ধাক্কা। দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের মিশনে সুনাম ও নেতৃত্ব ধরে রাখলেও, ড. ইউনুস সরকারের আমলে সেই অর্জন এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাফল্যের ঐতিহ্য
বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অন্যতম বৃহৎ অবদানকারী দেশ। আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশি সেনা ও পুলিশ সদস্যরা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় ইতিহাসে কালো দাগ ফেলেছে বর্তমান সরকারের শাসন পরিস্থিতি।
কেন এই প্রত্যাহার?
জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কারণ জানায়নি, তবে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক দমননীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং প্রশাসনিক অনিশ্চয়তার কারণে জাতিসংঘের গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশের ভেতরে বিচারবহির্ভূত গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও রাজনৈতিক প্রতিশোধের সংস্কৃতি সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউনুসের প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা
ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনুস বলেছিলেন -“আমরা কোথাও যাব না, সারা দুনিয়া আমাদের কাছে আসবে।”। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে তার উল্টো। আজ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের প্রতি দূরত্ব বজায় রাখছে। যেখানে একসময় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা গর্বের প্রতীক ছিলেন, এখন সেই মিশন থেকেই তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এ যেন এক বেদনাদায়ক বাস্তবতা।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য
অর্থনীতি ও কূটনীতিতে অভিজ্ঞ বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনুস সরকারের নীতিতে পেশাদারিত্বের অভাব ও আন্তর্জাতিক আস্থা সংকট তৈরি হয়েছে।
একজন সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন - “জাতিসংঘ মিশন থেকে পুলিশ প্রত্যাহার কেবল একটি প্রশাসনিক ঘটনা নয়; এটি বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার সংকটের প্রতিফলন।”
দেশে ক্ষোভ ও হতাশা
প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সদস্যদের পরিবারে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরা মনে করছেন, সরকার নিজের ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছে তাঁদের ওপর। একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন-“যারা জাতিসংঘের পতাকার নিচে দেশের মান বাড়িয়েছিলেন, আজ তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে সরকারের অপদক্ষতার কারণে।”
ইউনুস সরকারের “নতুন বাংলাদেশ” এখন আন্তর্জাতিক পরিসরেও ক্রমে একঘরে হয়ে পড়ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, কূটনৈতিক দূরত্ব আর প্রশাসনিক ব্যর্থতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি। ড. ইউনুস বলেছিলেন, বিশ্ব আমাদের কাছে আসবে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্ব আজ বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।